যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের গ্যালারিতে ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ একটি সেমিনারের আয়োজন করে। ছবি: রাজিব মন্ডল, ফটোগ্রাফার, যবিপ্রবি
Campus News
যবিপ্রবিতে সেমিনার: আতঙ্ক নয়, সচেতনতাই পারে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে
Aug 28, 2019
(যশোর ২৮ আগস্ট ২০১৯): ডেঙ্গু এডিস মশা বাহিত ভাইরাস জনিত একটি রোগ। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, গোটা পৃথিবীর সমস্যা। তবে আতঙ্ক নয়, সচেতনতাই পারে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে। ডেঙ্গু রোগের প্রতিরোধ এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে সকল প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক, অনলাইন, রেডিওসহ সকল গণমাধ্যম এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী সকলকে অংশগ্রহণ করতে হবে।
আজ বুধবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের গ্যালারিতে ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সেমিনারে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ আব্দুল মজিদ পাঠ্যপুস্তকে ডেঙ্গু রোগের বিষয়টি লিপিবদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এটা করা গেলে সবাইকে আরও বেশি আতঙ্কমুক্ত ও সতর্ক করা যাবে। তিনি বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গুর ব্যাপারে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সবাইকে সচেতন করতে অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, এতে অনেকে উপকৃত হবে। একইসঙ্গে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও নির্দেশনা প্রদানের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার খসরু পারভেজ। তিনি তাঁর গবেষণা থেকে ডেঙ্গু রোগের উৎপত্তি, বিস্তার, এর রোগের ভয়বহতা, সচেতনতা তৈরির গুরুত্বসহ প্রভৃতি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, এ বছর ফেব্রুয়ারিতে বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে বাংলাদেশে এর বিস্তার ব্যাপক হারে বেড়েছে। তাঁর মতে, কেউ দ্বিতীয়বার ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হলে লক্ষণসমূহ ভিন্ন রকম হয় এবং তা ৫০০ গুণ বেশি ভয়াবহ ও জটিল আকার ধারণ করে। এটি ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোমে রূপ নিতে পারে, যা ক্ষেত্র বিশেষে প্রাণঘাতিও হতে পারে।
অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার খসরু পারভেজ বলেন, ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নির্মূলে রাস্তার স্প্রে-ম্যান ঔষধ স্প্রে করলেই হবে না। কারণ, এডিস মশা নালা, পুকুর, খাল, নদী বা আবর্জনার স্তুপে বংশবিস্তার করে না। এডিস মশা ঘরে থাকে, বাসা বাঁধে বাড়ির ভেতরে জমানো পানির পাত্রে। মাত্র দুই মিলিমিটার পানি পেলেই এ মশা বংশ বিস্তার করতে পারে। কাজইে সিটি করপোরেশন, জেলা, উপজেলা এবং পৌরসভার পাশাপাশি এর সঙ্গে মানুষের সম্পৃক্তা না বাড়ালে কোনো কিছুতেই সফলতা আসবে না। তিনি তাঁর গবেষণায় দেখেছেন, এ মশা দেয়ালে না বসে টেবিলে, সোফা, পর্দা ও ঝুলন্ত কাপড়ের নিচে অন্ধকারে লুকিয়ে থাকে। তাই এসব জায়গায় অ্যারোসল স্প্রে করতে হবে। এ শিক্ষক-গবেষকের পরামর্শ, সারা বছরব্যাপী সারা দেশে এখন থেকে এডিস মশা নির্মূলে সমন্বিত ক্রাশ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে। সকল শহরের সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, ডাক্তার এবং সকলে মিলে ক্রাশ অ্যাকশন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে।
অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোঃ ইকবাল কবীর জাহিদের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন জীববিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন ড. কিশোর মজুমদার, পরিবেশ উন্নয়ন ও সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি ড. মৌমিতা চৌধুরী প্রমুখ। সেমিনারে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো: জাফিরুল ইসলাম, শেখ হাসিনা ছাত্রী হলের প্রভোস্ট ড. সেলিনা আক্তার, পরিচালক (হিসাব) মো: জাকির হোসেন, প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীবৃন্দ।